প্রাইমারি নিয়োগে একটা প্যানেল হওয়াই উচিৎ

দেশে বর্তমানে কাগজে কলমে বেকারের সংখ্যা ২৬ লক্ষ বলা হলেও প্রকৃত বেকারের সংখ্যা অনেক বেশি এটা আমরা সবাই জানি। দিন দিন এই সংখ্যা বেড়েই চলছে। এখন একটা সরকারি চাকরি যেন একটা সোনার হরিন। একটা জবের জন্য অনেক কাট খড় পুরিয়ে ভাইভা থেকে বাদ পড়া আসলেই অনেক কষ্টের। এত গুলো ধাপ পাড়ি শুন্য হাতে ফিরতে হয় কাউকে কাউকে। কিন্তু এটাই নিয়ম।  সবাই কে তো আর জব দেওয়া যাবে না। আর রিটেন পাশ সবাইকেই যদি নিয়োগ দেওয়া হবে তাইলে ভাইভা নামের আরেকটা পরীক্ষার কি কোন দরকার ছিল?

না, দরকার ছিল না। রিটেনে সাধারণত পদ সংখ্যার তিন গুন বেশি প্রার্থী টিকানো হয়। ভাইভা নিয়ে প্রতি তিন জনে এক জন রাখা হয় আর দুই জন বাদ। এটাই নিয়ম।  এই যে তিন জনে এক জন নিয়োগ দেওয়া হয় তার সবাই কিন্তু যোগদান করে না। আবার অনেকে যোগদান করে অন্য কোন ভালো সুবিধা বা কারনে জব ছেড়ে দেয় বা শিফট করে। তখন পোস্ট ফাকা হয়ে যায়।  এই ফাঁকা পোস্ট পুরন করার জন্যই প্যানেল প্রয়োজন।

তার মানে এই না যে যারা ভাইভা দিয়েছে সবাই কে চাকুরী দিতে হবে। পিএসসি ক্যাডার নিয়োগ দেওয়ার সময় ২০০ মার্কের প্রিলি, ৯০০/১১০০ মার্কের লিখিত আর ২০০ মার্কের ভাইবা পরীক্ষা নেয়। ভাইভা পাস করেও অনেকেই নন ক্যাডার থেকে নিয়োগ পান না বা অনেক অপেক্ষা করতে হয়।

তাই ৮০ মার্কের একটা এমসিকিউ  টাইপ রিটেন আর ২০ মার্কের ভাইবা দিলেই সবাই কে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব না। তবে প্যানেল করে খালি পদ গুলোতে মেধা তালিকা থেকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্যানেল প্রয়োজন এবং খুব প্রয়োজ। ব্যাংক গুলো এখন তৃতীয় ধাপের প্যানেলও ঘোষণা করে তাই প্রাইমারি অধিদপ্তরের উচিৎ প্যানেল চালু করা। সাথে ২০১৮ ব্যাচ থেকে নিয়োগযোগ্য যতগুলো পদ ফাঁকা হয় তা ২০১৮ ব্যাচের মেধা তালিকা থেকে নিয়ে নিয়োগ দেওয়া।

এবার আসি ভিন্ন কথায়।
প্যানেল এই আপদকালীন সময়ে কেন একটু বেশিই প্রয়োজন? 
আমরা অনেক সময় বিভিন্ন পত্রিকায় দেখি শিক্ষক সংকটের খবর। কিছু কিছু এলাকায় ভয়াবহ শিক্ষক সংকট লক্ষ্য করা যায়। শিক্ষক না থাকায় মসজিদের মুয়াজ্জিন শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছে।এটা আমাদের শিক্ষা ব্যাবস্থার জন্য খুব খারাপ।

আমরা দেখেছি কিছু দিন আগে ৩৯ বিসিএস থেকে ডাঃ নার্স নিয়োগ দিতে। সামনে আরও কিছু দেওয়ার জন্য পিএসসি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ৩৯ বিসিএস থেকে যতগুলো নিয়োগ দেওয়ার তা আগেই দেওয়া হয়েছিল। নতুন করে যে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বা হবে তা কিন্তু বিশেষ চাহিদার কারনে দেওয়া হচ্ছে। প্রাইমারি শিক্ষক আর ডাঃ যদিও এক না, তবে শিক্ষার মান উন্নয়নে এই দূর্যোগের শেষে কিছু শিক্ষক ২০১৮ ব্যাচ থেকে নিয়োগ দেওয়া যেতেই পারে। নতুন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে  অনেক সময়ের দরকার। তাই  এখান থেকে কিছু নিয়োগ দিয়ে সংকট কাটিয়ে ওঠা যেতে পারে। তবে তার মানে এই নয় বাকি ৩৭০০০ হাজার কে নিয়োগ দিতে হবে। প্যানেল করে, যারা যোগদান করে নাই সেগুলো সহ যে সকল স্কুলে ভয়বহ শিক্ষক সংকট আছে তাদের তালিকা করে দুই চার হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া উচিৎ।  তবে অবশ্যই তা মেধা তালিকা থেকে।

সর্বশেষ আবার প্রথম কথাই বলি, যোগদান না করা আর করে অন্য কোন জবে শিফট হওয়ার জন্য ২০১৮ ব্যাচের যে পদ গুলো ফাঁকা হয়েছে অন্তত সে গুলো এই ব্যাচের মেধা তালিকা থেকে নেওয়ার জন্য হলেও প্যানেল দরকার এবং দরকার। এই প্যানেলের কোন বিকল্প নাই।     

              
প্রাইমারিতে একটা প্যানেল হওয়াই উচিৎ
প্রাইমারিতে একটা প্যানেল হওয়াই উচিৎ   


আরও দেখুন

প্রাইমারি শিক্ষকদের বিভাগীয় প্রার্থীতা বহাল রাখা সহ অন্যান্য দাবি কেন যৌক্তিক নয়

বর্তমান সময়ের আলোচিত তিনটি দাবি

Post a Comment

0 Comments